অনেক বাড়িতেই শীতকালে দই খাওয়া হয়না। ঠান্ডা লাগবে। শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে, এইসব কারণ ভেবে (Curd in Winter Good or Bad)। শীতকালে দই খেলে ঠান্ডা লাগে নাকি শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকে। জানুন, বিশেষজ্ঞদের মতামত।
নিউজ অফবিট ডিজিটাল ডেস্ক: ডাক্তারের পরামর্শে আজকাল আমরা সকলেই সারা বছরই দই খাই। কিন্তু শীতকালে বাড়ির বড়দের মুখে শোনা যায়, দই খেলে ঠান্ডা লাগে। তাই শীতকালে দই খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু গবেষণা বলছে অন্য কথা। দই খাওয়ার সঠিক সময় জানলে আপনিও নানা রোগের হাত থেকে রেহাই পাবেন। দই সর্বদা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অন্যতম প্রোবায়োটিক হিসাবে দই কাজ করে। দই খেলে কখনোই ঠান্ডা লাগে না কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে ঠান্ডা লাগার আসল কারণ ভাইরাস। এই প্রতিবেদন থেকে আপনিও জেনে নিন, দই স্বাস্থ্যের জন্য কেন উপকারী? কখন দই খাবেন, দই এর উপকারিতা কী?
দই শুধুমাত্র প্রোবায়োটিক হিসাবে কাজ করে না। দইয়ে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, ল্যাক্টোব্যাসিলাস যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিহত করে। আমরা দই থেকে যে ঠান্ডা লাগার ভয় পাই, তা হল মিথ্যে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারবাবুরা বলছেন, দইয়ে থাকে ভিটামিন সি যা সর্দি কাশির চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন : জানেন কি ? শীতের ঠান্ডা, কাশি ও ক্লান্তি দূর করবে এই ৫টি ফল | Winter Immunity Booster
দই এর উপকারিতা কী কী?
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: দই শরীরের পিএইচ ব্যালেন্সে ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে। অ্যাসিডিটি কমায়, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- হাড় মজবুত করে: শীতকালে কমবেশি অনেক মানুষই হাড়ের সমস্যায় ভোগেন। একটা ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট সারাদিনে বোন ডেনসিটি সেভাবে বৃদ্ধি করে না। দইয়ে থাকে কম ক্যালরিযুক্ত ফ্যাট। ফলে দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে: শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। প্রচুর মানুষ অ্যাকনির মত সমস্যায় ভোগেন। দইয়ে থাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড। যা মৃত কোষকে পরিষ্কার করে ত্বককে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
কখন দই খাওয়া উচিত
- দুপুরে খান, রাতে নয়: আয়ুর্বেদ মতে দুপুরে দই খাওয়া সবচেয়ে উপযুক্ত। এই সময় হজমশক্তি বেশি থাকে।
- ঠান্ডা দই নয়: ফ্রিজে রাখা দই কখনো খাবেন না। ঘরের তাপমাত্রায় বা হালকা কুসুম গরম দইই শরীরের জন্য ভালো।
- চিনি নয়, গুড় বা গোলমরিচ দিন: আয়ুর্বেদ বলে, দইয়ের সঙ্গে চিনি খেলে কফ বাড়ে, কিন্তু গুড় বা গোলমরিচ মেশালে দই আরও হজমযোগ্য হয়।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এড়ানোর উপায়
- ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা দই নয়, ঘরের তাপমাত্রায় খান।
- সকালে বা রাতে নয়, দুপুরে খান।
- গোলমরিচ বা গুড় মিশিয়ে খান।
- দুধ, মাছ, বা ফলের সঙ্গে দই খাবেন না।
- একসঙ্গে অল্প পরিমাণে খান, অতিরিক্ত নয়।
আয়ুর্বেদের পাশাপাশি আধুনিক বিজ্ঞানও দইকে “সুপারফুড” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ডাক্তার ও পুষ্টিবিদদের মতে, দই হলো শরীরের জন্য প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক, যা পেটের “গুড ব্যাকটেরিয়া” বৃদ্ধি করে এবং হজমশক্তি বাড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে প্রচুর ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও ভিটামিন B12 থাকে — যা হাড় ও দাঁত মজবুত রাখে এবং ক্লান্তি দূর করে। প্রতিদিন এক ছোট বাটি দই খেলে হজমের সমস্যা, গ্যাস বা কোষ্ঠকাঠিন্য অনেকটাই কমে যায়। দইয়ে থাকা ল্যাক্টোব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা (ইমিউনিটি) শক্তিশালী করে, ফলে ভাইরাল ইনফেকশন বা ঠান্ডা লাগার ঝুঁকি কমে।

